’২১ সালের মধ্যে সারাদেশে ইন্টারনেট

প্রকাশের সময় : 2018-05-11 15:03:51 | প্রকাশক : Admin

ফিরোজ মান্নাঃ দেশের সব মানুষকে ২০২১ সালের মধ্যে নেটওয়ার্কের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই সময়ের মধ্যে জনগণের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের সব সুযোগ-সুবিধা। দেশের সব উপজেলাকে উচ্চগতির ফাইবার অপটিক ক্যাবলের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন সব ইউনিয়নকে সংযুক্ত করতে কাজ চলছে।

সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, দেশের সব মানুষকে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এগুলো ২০২১ সালের আগেই শেষ হবে। সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে ইনফো সরকার-৩। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের সব ইউনিয়নকে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এক হাজার ৪ টি ইউনিয়নে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।

এর আগে ইনফো সরকার-২ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ উপজেলা ফাইবার ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তবে কিছু উপজেলা দুর্গম হওয়ায় নেটওয়ার্কের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এগুলোকে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে কানেক্ট বাংলাদেশ নামের একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় ‘ওয়্যারলেস’ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হবে।

দেশের কোন মানুষ যেন ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ইন্টারনেট এখন মানুষের অধিকারের মধ্যে চলে এসেছে। দেশে চালু হয়েছে ফোর জি সেবা। এসব সুবিধা থেকে দেশের মানুষ আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে আরও কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হবে। জানা গেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ  কার্যক্রম ঘোষণার পর সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। আগামী বছর এ সংখ্যা বেড়ে ৬০ শতাংশে চলে যাবে। আর ২০২১ সালে হবে শতভাগ। আমরা এ জন্য নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।

তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে দেশে কয়েকটি আন্তর্জাতিকমানের আইসিটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলাগুলো থেকে দেশের বিদেশী তথ্যপ্রযুক্তিবিদের কাছ থেকে জ্ঞান ভাগ করে নিতে পেরেছেন। এর ফলে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা সমৃদ্ধ হয়েছেন। আমাদের উদ্দেশ্য: প্রযুক্তি সেবা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরি, তরুণদের অংশগ্র্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরি করা।

সূত্র জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করছে। চীন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ১৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহযোগিতা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পরে এটাই সবচেয়ে বড় অর্থ সহযোগিতা পেয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। চীনের এই টাকা দিয়ে ‘টিয়ার-৪ ডেটা সেন্টার’ স্থাপনের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে চীন কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল ল্যাব তৈরি করে দেয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

চীনের পরে কোরিয়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বড় ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে। কোরিয়া মহেশখালি দ্বীপকে ‘ডিজিটাল দ্বীপ’ করে দিয়েছে। আরও কয়েকটি দেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে সবার আগে গোটা দেশকে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা। নেটওয়ার্কের আওতা না বাড়লে বিনিয়োগ বাড়বে না। এজন্য নেটওয়ার্কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। - জনকন্ঠ