ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

প্রকাশের সময় : 2019-04-11 16:53:09 | প্রকাশক : Administration ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

সিমেক ডেস্কঃ বাঙালী জাতি সুদীর্ঘ দুই শতাব্দীরও অধিককাল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও পাকিস্তানের শাসনে শৃঙ্খলিত ছিল। ২৫০ বছর আগে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, স্বাধীনতার সেই সূর্য আবারও উদিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে। বাঙালীর দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষার পর তৎকালীন কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে রচিত হয়েছিল আরেকটি ইতিহাস। একাত্তরের অগ্নিঝরা এদিনেই বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভিত্তিমূল রচিত হয়।

“বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের অখন্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।” “আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।

 রাষ্ট্রপ্রধান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। রাষ্ট্রপ্রধানই সর্বপ্রকার প্রশাসনিকও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অধিকারী”।

সেই ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। আজ থেকে ৪৪ বছর আগে একাত্তর সালের অগ্নিঝরা এই দিনে হানাদার বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত বাঙালী জাতির আলোকবর্তিকা হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের শপথগ্রহণ আর মুক্তির সনদ উপরোক্ত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠের মাধ্যমে কবর রচিত হয় অখন্ড পাকিস্তানের। রচিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস। ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।

বাংলা, বাঙালী, মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর যেন অভিন্ন নাম। স্বাধীনতা অর্জনের পথে ১৭ এপ্রিল এক ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত দিন। বাংলাদেশের স্বাধীন সরকারের শপথ নেয়ার দিন, স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের দিন। একাত্তরের অগ্নিঝরা এ দিনেই বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিমূল রচিত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত বাঙালী জাতির আলোকবর্তিকা হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রচিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস।

পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক করে এদিন গঠিত হয় প্রবাসী বিপ্লবী সরকার। বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পায় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের নাম। পরবর্তীতে ঐতিহাসিক এ দিবসটি মুজিবনগর দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এ কারণে মুজিবনগর ও ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু নয়, বিশ্ব মানুষের মুক্তির ইতিহাসে আলাদা বিশেষত্ব রাখে। কারণ এখানে ঘোষিত হয়েছিল একটি জাতির মুক্তির জন্য স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।