সিমেক ডেস্কঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৩০ জন প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত করেছে। সে তালিকায় নেই সাবেক জাতীয় ফুটবলার আরিফ খান জয়। মন্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বাদ পড়াতে আলোচনার ঝড় বইছে পুরো ক্রীড়াঙ্গনে। জয়ের বাদ পড়ার জন্য তার নিজের কৃতকর্মকে দায়ী করছেন অনেকে। অনেকে দায় চাপাচ্ছেন সহোদরদের নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারাকে।
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার পর সাবেক এ ফুটবলারকে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক এ অধিনায়কের এমপি ও মন্ত্রী হওয়াটা ছিল রাজনীতিতে বড় ধরনের চমক। কিন্তু এক মেয়াদ যেতে না যেতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা থেকে নেমে যেতে হলো তাকে। ক্রীড়াঙ্গনের মানুষের প্রধান আলোচনাই-তাদের অন্যতম অভিভাবক আরিফ খান জয়ের দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া।
ক্রীড়া উপমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আরিফ খান জয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। এ দপ্তরের চেয়ারম্যান ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ডঃ বীরেন শিকদার। বীরেন শিকদার মাগুরা-২ আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো নৌকার টিকিট পেয়েছেন। তবে, আরিফ খান জয় যে এবার নৌকায় চড়তে পারবেন না তা অনেকটা অনুমিতই ছিল। উপমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিতর্কিত কর্মকান্ডে সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি।
মন্ত্রী হয়েও তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লীগের ডাগআউটে দাঁড়ানো, খেলার মাঠে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবেশ, পুলিশের এসআইকে মারধর, ব্যানারে নাম না থাকায় নিজ মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ ভাঙচুর থেকে শুরু করে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছেন আরিফ খান জয়। চাকরি কিংবা অন্য কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকার (নেত্রকোনা-২) মানুষের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রতারণার অনেক খবরও তার বিরুদ্ধে প্রকাশ হয়েছে মিডিয়ায়।
সেই সঙ্গে সহোদরদের বেপরোয়া আচরণেও সমালোচিত হয়েছেন আরিফ খান জয়। বিশেষ করে তার দুই ভাই মিঠু ও মাসুদ খান জনি বড় ভাইয়ের প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। তার এই দুই ভাইয়ের কর্মকাণ্ডে সেখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একাধিকবার কেন্দ্রে নালিশও করেছিলেন।
খেলোয়াড়ী জীবনে রাফ অ্যান্ড টাফ ছিলেন আরিফ খান জয়। মন্ত্রিত্বের বেলায়ও তাই। একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডঃ বীরেন শিকদারের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল তার। ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেও সময়মতো উপস্থিত না হওয়া এবং না আসার অভিযোগ অনেক আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে।
৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের জন্য নৌকার প্রার্থী হিসেবে যে ২৩০ জনকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই আছেন। তবে, ফুটবলার মাত্র একজন তিনি আবদুস সালাম মুর্শেদী। খুলনা-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। তবে, বিএনপিতে একাধিক ফুটবলার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। মাশরাফি মনোনয়ন পাওয়ায় ক্রিকেটের পাল্লা ভারি হয়েছে এবারের নির্বাচনে। আরিফ খান জয় বিতর্কিত না হলে হয়তো নৌকায়ই থাকতেন তিনি। কিন্তু তাকে নামিয়ে দিয়ে নেত্রকোনা-২ আসনে অন্য প্রার্থী দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
-সূত্রঃ মানবজমিন