তুফান মাজহার খানঃ বর্তমানে বাংলাদেশে যে সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করেছে, তা হল- কোচিং বাণিজ্য। সরকারিভাবে কয়েক দফায় বন্ধের ঘোষণা এলেও কোনোক্রমেই বন্ধ হচ্ছে না তা। কী শহর, কী গ্রাম; নগর কী বন্দর- সবখানেই চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যেই চলছে কোচিং সেন্টারগুলো।
ভোর থেকে রাত অবধি বিভিন্ন ব্যাচে পড়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এমনও তথ্য পাওয়া যায়- কোচিং সেন্টারগুলোয় স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সরাসরি জড়িত থাকেন। বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে কোচিং সেন্টারের কর্ণধাররা প্রকাশ্যে রঙিন ও রকমারি পোস্টার, লিফলেটে ছেয়ে ফেলে গ্রাম কিংবা শহরের দেয়ালগুলো। এমনকি কোথাও কোথাও পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ করে সাইনবোর্ড লাগানোর পরও তা কেউ মানছে না।
এ তো গেল বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা কোচিং সেন্টারগুলোর কথা। এছাড়াও স্কুলভিত্তিক কোচিংয়ের যে প্রভাব এ দেশে রয়েছে, সেগুলোর কর্মকাণ্ডও এসব কথিত কোচিং সেন্টারগুলোর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বিশেষ করে, কেজি ও হাইস্কুলগুলোয় এ ব্যবসা জমজমাট। স্কুলগুলোয় ক্লাসশেষে কিংবা ক্লাসের পূর্বে শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের নামে সেসব কোচিং করানো হয়। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী আছে, যারা আর্থিক কারণে ‘বিশেষ ক্লাস’ নামক এসব কোচিং করতে অপারগ। কেননা, এসব বিশেষ ক্লাসের ফি একেবারেই কম নয়। তারপরও তাদের একপ্রকার জোরপূর্বক সেসব কোচিং করতে বাধ্য করা হয়। এমনও অভিযোগ শোনা যায়, কোচিং না করলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়া হয় অথবা ফেল করিয়ে দেয়ার ভয় দেখানো হয়। এর ফলে শত কষ্ট হলেও তারা কোচিং করতে বাধ্য হয়। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট নজর না থাকায় এমনটি ঘটছে বলে দাবি করেছেন অভিভাবকরা। তাই বৃহৎ এ সমস্যাটির সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। - যুগান্তর