দক্ষিণাঞ্চলে গতি বাড়ছে শিল্পায়ন-বাণিজ্যে

প্রকাশের সময় : 2018-05-11 15:04:19 | প্রকাশক : Admin
দক্ষিণাঞ্চলে গতি বাড়ছে শিল্পায়ন-বাণিজ্যে

সিমেক ডেস্কঃ দখিনা অর্থনীতির আশাজাগানিয়া দুই বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতু ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাজ এগোচ্ছে দ্রুত গতিতে। এগোচ্ছে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং এগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মযজ্ঞ। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে গতি বাড়ছে শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের। শিল্পকারখানা স্থাপনে জমি কিনছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়ছে শিল্পায়ন।

এ ছাড়া সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা ঘিরে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন আর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থনের নতুন সুযোগ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা নতুন শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য পায়রা বন্দরসহ পটুয়াখালীর লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার মহাসড়কের আশপাশে জমি কিনতে শুরু করেছেন। জমির দামও ২০ থেকে ২৫ গুণ বেড়ে গেছে। ১০ হাজার টাকা কাঠার জমি এখন ২ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিল্প স্থাপনে প্রধান সড়কের পাশে জমি কিনে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। আবার দেশের কয়েকজন শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তা পায়রায় শিল্প স্থাপনের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। নাভানা, গাজী, পারটেক্স, মদিনা, আজমত গ্রুপের মতো প্রায় অর্ধশত বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পায়রা বন্দর এলাকা, কুয়াকাটাসহ আশপাশে জমি কিনেছে।

পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ময়মনসিংহের দিকে যেসব শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে, তা এখন দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ধাবিত হবে। পায়রা বন্দরকেন্দ্রিক পটুয়াখালী ও পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের ভাঙ্গার দিকে ব্যাপক শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এ ক্ষেত্রে সরকার যদি ভোলা থেকে পটুয়াখালী ও বরিশালে গ্যাস সরবরাহ করতে পারে, তাহলে আগামী দু-তিন বছরের মধ্যেই বেশকিছু সম্ভাবনাময় শিল্প গড়ে উঠবে। এর মধ্যে রয়েছে লৌহজাত ও পোশাকশিল্প। এ ক্ষেত্রে প্রচুর গ্যাসের প্রয়োজন হবে।’

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলার কয়েক কোটি মানুষের প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালে চীন থেকে আমদানি হওয়া পাথরবোঝাই জাহাজ নোঙর করার মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে বাণিজ্যিক যাত্রা করেছে পায়রা সমুদ্র বন্দর। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যখন গাড়ি যাবে দখিনের জনপথে, তখন সেতুর নিচ দিয়ে রেলও যাবে। তাতেই দখিনের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে, এ আশা নিয়ে বৃহৎ বৃহৎ শিল্প গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অবহেলিত এই অঞ্চলে শিল্পায়নে আগ্রহীরা।

পটুয়াখালী ও ভোলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাচ্ছে সরকার। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী ঘিরে মাস্টারপ্ল্যানও তৈরি করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারই অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু উপশহর কাম আবাসিক এলাকা উন্নয়ন’ প্রকল্প। এখানে লাখো মানুষের আবাসনের পাশাপাশি থাকবে উন্নত নাগরিক জীবনের সব সুবিধা। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে এখানে জমির অভাব নেই। সম্ভাবনা আছে পোশাকশিল্প নগরী গড়ে তোলার। মাঝের চরের মতো অজপাড়ায় সরকার গড়ে তুলতে চাইছে তথ্যপ্রযুক্তির বিশাল সম্ভার বা আইটি পার্ক।

চট্টগ্রামের পর বরিশাল অঞ্চলই হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। জানা গেছে, পায়রা সমুদ্রবন্দরের পাশে প্রায় ৫০০ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে আধুনিক শেরেবাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক নৌঘাঁটি। এই নৌঘাঁটিতে নৌ-কমান্ডো, এভিয়েশন, জাহাজ ও সাবমেরিন বার্থিং সুবিধাথাকবে। তবে প্রায় ৬ হাজার একর এলাকাবিশিষ্ট এই বন্দর ঘিরে নানা স্বপ্ন বুনছে সরকার।

অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে এখানেই গড়ে উঠবে বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান। নির্মিত হবে সার কারখানা, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড), জাহাজ নির্মাণ শিল্প, এলএনজি টার্মিনাল, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগ মোকাবিলায় থাকবে উপকূলজুড়ে সবুজ বেষ্টনী ও ইকো-ট্যুরিজম। সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা পায়রা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্রে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করেন       সংশ্লি−ষ্টরা। কুয়াকাটাকে ঢেলে সাজাতে সরকার ইতিমধ্যেই মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে।

৮-১০ বছর ধরে দক্ষিণাঞ্চলে যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে, যেখানে সরকার পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, তাপ বিদ্যুতকেন্দ্র, কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে তাতে আগামী ১০ বছরে এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। লেবুখালীতে নির্মাণাধীন পায়রা সেতু থেকে পায়রা সমুদ্রবন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন আর পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পরই মূলত পায়রা সমুদ্রবন্দর সচল হবে। সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা নিবিড় হবে। কুয়াকাটায় দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড় বাড়বে। দক্ষিণাঞ্চলের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক: সরদার মোঃ শাহীন
উপদেষ্টা সম্পাদক: রফিকুল ইসলাম সুজন
বার্তা সম্পাদক: ফোয়ারা ইয়াছমিন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আবু মুসা
সহ: সম্পাদক: মোঃ শামছুজ্জামান

প্রকাশক কর্তৃক সিমেক ফাউন্ডেশন এর পক্ষে
বিএস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড,
ওয়ারী, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০ হতে প্রকাশিত।

বানিজ্যিক অফিস: ৫৫, শোনিম টাওয়ার,
শাহ মখ্দুম এ্যাভিনিউ, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
বার্তা বিভাগ: বাড়ি # ৩৩, রোড # ১৫, সেক্টর # ১২, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন: ০১৮৯৬০৫৭৯৯৯
Email: simecnews@gmail.com