সমস্যা হাসিতে! সমাধান কাশিতে!!
প্রকাশের সময় : 2018-09-13 11:09:04 | প্রকাশক : Admin
যায়নুদ্দিন সানী: টিভি সেভাবে দেখি না। পত্রিকা নিয়েও কিছুটা আপত্তি আছে। টিভি চ্যানেল? এন্টারটেইনমেন্টের জন্য মাঝে মাঝে টকশো দেখি। একবার এক সম্পাদককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিশ্বস্ত সংবাদপত্র কোনটা? উনি বললেন, কোনটাই না। তখন জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাহলে সঠিক খবর পাব কিভাবে? উনি জানালেন, কয়েকটা পত্রিকা পড়ে নিজে একটা আন্দাজ করে নেবেন।
সম্পাদক সাহেবের ফর্মুলাতেই ফিরে এসেছি। তবে নেটে। অ্যাডবিহীন, নিজ মর্জিমাফিক খবরগুলো দেখে নিই। অনেকগুলো খবর দেখে যোগ বিয়োগ করে সঠিক খবর সম্পর্কে একটা ধারণা করে নিই।
সঠিক খবর পেলাম, এমন গ্যারান্টি দিচ্ছি না। তবে বিরক্ত কম বোধ করি, এই যা। নেটের দ্বারস্থ হওয়ার আরেকটা কারণ হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ার বিশ্বস্ততা নিয়ে কিছু সমস্যা থাকলেও এরা অনেক বেশি নির্ভিক। অন্তত পত্রিকা যে খবর প্রকাশের সাহস দেখাবে না, ফেসবুক সেটা দেখায়।
যাই হোক, ঘটনাটা হাসির পর থেকেই শুরু হয়েছিল। প্রথম দিন ছিল ছবি। হবেই, শিশু বলে কথা। আলাদা ইফেক্ট ফেলে পিচ্চি পাচ্চির লাশ। খবরটা হয়তো দুদিনেই গায়েব হয়ে যেত, বাধ সাধলেন নৌমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে ক্লোজ আপ টুথপেস্টের অ্যাড স্টাইলে একটা ভুবন ভোলানো হাসি দিলেন।
হাসি মুখের শাহজাহান খানের সেই সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওর লিঙ্ক দেখেও, ভিডিওটা দেখবার প্রয়োজন বোধ করিনি। এর আগেও তিনি বেশ কবার পার পেয়েছেন, সো ভেবেছিলাম, এবারও ঘটনার অন্যথা হবে না। যখন দেখলাম, কাহিনি বেশ জমজমাট, তখন বুঝলাম, ভিডিওটা না দেখলেই না।
দেখলাম। বেচারা। একটা হাসি যে উনাকে এমন সমস্যায় ফেলবে, উনি বোধহয় স্বপ্নেও কল্পনা করেননি। বক্তব্যে তিনি এমন কিছু নতুনত্ব আনেননি। বাট হাসিটা জাস্ট লাজওয়াব। বুঝলাম, বাঙ্গালি এবার ফুসবে। পাবলিক যে সবসময় ঠিক জেনুইন কারণে ক্ষেপে, এমনটা না। তবে কিছু ব্যাপার আছে, যেগুলো দিয়ে পাবলিক ক্ষেপানো বেশ সহজ। হাসিটা তেমনই এক ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
পরিস্থিতি দেখে ভাবতে বসলাম, কি হতে পারে। কল্পনার সাথে সাথে অতীতও হাতড়ালাম। স্মৃতি জানাল, ১/১১র সময় হাসির কারণে সর্বশেষ জবাই হয়েছিলেন উপদেষ্টা তপন চৌধুরী। পাবলিকের রোষ থামাতে পদত্যাগ করেছিলেন। কেবল হাসিই যে এমন ঘটনার জন্ম দেয়, তা না। কিছু ডায়ালগও খেল দেখায়। ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে’ পাবলিকের রাগ সপ্তমে চড়েছিল। মন্ত্রী মশাইয়ের ডায়ালগ হঠাৎ করে তাকে রীতিমত কিংবদন্তী করে দেয়।
যাই হোক, এবার আসল কথায় আসি। এসব পদত্যাগ কি আদৌ কোন উপকারে দিয়েছে? ডায়ালগবাজ মন্ত্রী সরে যাওয়ার পরে কি মৃত্যুর মিছিল থেমেছিল? নাহ, ওসবে তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি। যা হয়েছিল, তা হচ্ছে, ডায়ালগে কিছুটা সংবেদনশীলতা এসেছিল, তা ও কিছুদিনের জন্য, এই যা।